• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন বিদেশীরা

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন বিদেশীরা

প্রতিকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতির আকার এক হাজার বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি, যার গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ আসে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বা এফডিআই থেকে। কিন্তু এফডিআই বাড়াতে সরকারের নানা পদক্ষেপের পরও দিনে দিনে কমছে নতুন বিদেশি বিনিয়োগ।

দুই বছর আগেও এই বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ায় তা বেশ ভালো প্রভাব রেখেছিল অর্থনীতিতে। কিন্তু হঠাৎ করে তা কেন কমছে, এ নিয়ে নানা ধরণের বিশ্লেষণ পাওয়া যাচ্ছে অর্থনীতিবিদ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে।

অর্থনীতিবিদরা এই বৈদেশিক বিনিয়োগ কমার কারণ হিসেবে ডলার সংকট, অর্থ পাচার ও দুর্নীতি, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অর্থনীতির অস্থিতিশীলতা, সেবা প্রাপ্তিতে ভোগান্তি ও জ্বালানি সংকটের মতো বিষয়গুলোকে মূল কারণ হিসেবে মনে করছেন।

তবে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ও বর্তমান দুইজন মন্ত্রী বিবিসিকে বলেছেন, নির্বাচন কেন্দ্রিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণেই কিছুটা কমেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ।

বিনিয়োগকারী বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর বাংলাদেশে নিয়ে আসা অর্থ সংক্রান্ত জরিপ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ এই জরিপের রিপোর্ট প্রকাশ হয় গত ডিসেম্বরের শুরুতে।

রিপোর্টে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে নিট এফডিআই প্রবাহ ছিলো ৩২৪ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অথচ আগের বছর অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থ বছরে এই পরিমাণ ছিলো ৩৪৩ কোটি ৯৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার।

হিসাব বলছে, বছর ব্যবধানে নিট এফডিআই প্রবাহ কমেছে ৫.৫২ শতাংশ।

নিট প্রবাহের এই চিত্রের বিপরীতে বিদেশি নতুন বিনিয়োগকারীরা এই অর্থ বছরে নতুন মূলধন এনেছে অনেক কম। ২০২১-২২ অর্থ বছরে নতুন মূলধন বিনিয়োগের পরিমাণ ১৩৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা হলেও গত অর্থ বছরে তা কমে দাড়ায় ৭৯ কোটি ৫৯ লাখ ডলারে। এ হিসেবে নতুন বিদেশি মূলধনি বিনিয়োগ কমেছে ৪০ দশমিক ৯১ শতাংশ।

বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যের গবেষণা প্রতিষ্ঠান আঙ্কটাডের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২০১৪ সালে এফডিআইয়ের প্রবাহ ছিলো ২৫৬ কোটি ডলার, ২০১৫ সালে ২২৩ কোটি, ২০১৬ সালে ২৩৩ কোটি, ২০১৭ সালে ২১৫ কোটি, ২০১৮ সালে ৩৬১ কোটি, ২০১৯ সালে ২৮৭ কোটি, ২০২০ সালে ২৫৬ কোটি, ২০২১ সালে ২৮৯ কোটি। আবার ২০২২ সালে রেকর্ড ৩৪৮ কোটি ডলার আসলেও ২০২৩-এ এসে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৩২৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, গ্লোবাল ইন্টারেস্ট রেট অনেক বেড়ে গেছে বিভিন্ন দেশে। ফলে ক্যাপিটালের যে ফ্লো থাকে তা স্বাভাবিকভাবে যে সমস্ত দেশে ইন্টারেস্ট রেট বেশি, সে সমস্ত দেশে ফ্লো করে। আমার এখানে কেউ বিনিয়োগ করতে হলে তাকে দুইটা ফ্যাক্টর কনসিডার করতে হয়। তার একটা হলো একচেঞ্জ রেট রিস্ক, আরেকটা হলো ইনভেস্টমেন্ট রিস্ক। যে কারণে ক্যাপিটালগুলো উন্নত দেশের যেখানে এক্সচেঞ্জ রেটের কোনও রিস্ক নেই সেখানে এই মুদ্রাগুলো চলে যায়।

২৯ জানুয়ারি ২০২৪, ০৭:২৭পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।