এমপি আনার হত্যা: ঝিনাইদহ থেকে আ.লীগ নেতা আটক
ফাইল ছবি
সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে তার খুনিদের একজনের সঙ্গে ঝিনাইদহের এক আওয়ামী লীগ নেতা দেখা করেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঝিনাইদহ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবু গত ১৭ মে ফরিদপুরের ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে একটি গাড়ির মধ্যে আমানুল্লাহর সঙ্গে দেখা করেন এবং যেখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেখানকার ছবি দেখেন এবং হত্যাকাণ্ডে কত টাকা হাতবদল হয়েছে তা নিয়ে কথা বলেন।
রোববার ঢাকার একটি আদালতে পুলিশের দাখিল করা তদন্তের অগ্রগতি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।
কামাল আহমেদ বাবু যিনি নিজ শহরে বাবু নামে পরিচিত আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে আগের দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে হোয়াটসঅ্যাপে আমানুল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন মামলার তদন্তকারী বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার (ডিবি) মাহফুজুর রহমান।
শনিবার রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে বাবুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গতকাল তার ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এনিয়ে এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বাবু এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামানের মামাতো ভাই। এর আগে আমানুল্লাহ আদালতে স্বীকার করেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য হত্যাকাণ্ডে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের সমন্বয়কারী ছিলেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, 'আক্তারুজ্জামান ও আমানউল্লাহর সঙ্গে অনলাইনে হওয়া বেশিরভাগ কথোপকথন বাবু মুছে ফেলেছেন। অপহরণ ও হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন বলে আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে।'
গ্রেপ্তারকৃত অপর তিন আসামি সেলেস্টি রহমান, আমানুল্লাহ ও তানভীর ভূঁইয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং কারাগারে রয়েছেন।
জিহাদ হাওলাদার ও সিয়াম হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। তবে আক্তারুজ্জামান যিনি এমপি আনারের সঙ্গে স্বর্ণ ও মাদক চোরাচালান চক্র চালাতেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এমপি আনার গত ১২ মে কলকাতায় গিয়ে বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে এক রাত থাকেন। পরের দিন তিনি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা বলে বের হন। গত ২২ মে ভারত ও বাংলাদেশের পুলিশ জানায়, এমপি খুন হয়েছেন।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি গতকাল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাশীপুর এলাকার একটি খালের পাড় থেকে এমপি আনারের সন্দেহভাজন হাড় উদ্ধার করেছে।
১৪ দিনের রিমান্ডে থাকা সিয়ামকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি কর্মকর্তারা এই হাড় উদ্ধার করেন। নেপাল থেকে গ্রেপ্তারের পর সিয়ামকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়।
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি) এ কে চতুর্বেদী বলেন, 'আমরা কিছু হাড় উদ্ধার করেছি। প্রাথমিকভাবে, এটি মানুষের হাড় বলে মনে হচ্ছে। আমরা সেগুলোকে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠাচ্ছি।'
'হাড়গুলো মানুষের পাঁজরের ও হাতের বলে মনে হচ্ছে। মাথার খুলি এখনও উদ্ধার করা যায়নি।'
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি কর্মকর্তারা বলেন, খালের তীরে যে জায়গা থেকে হাড়গুলো উদ্ধার করা হয়েছিল সেটি নিউ টাউন অ্যাপার্টমেন্ট থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে যেখানে এমপিকে হত্যার পর তার দেহ টুকরো টুকরো করা হয়েছিল।'
গত ২৩ মে গ্রেপ্তার কসাই জিহাদ হাওলাদারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এই এলাকায় অনুসন্ধান চালাচ্ছি।