মাদারীপুরে হঠাৎ ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ
মাদারীপুর জেলায় হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ পানিবাহিত রোগের
প্রকোপ। এ রোগে আক্রান্ত শুধুমাত্র জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক রোগী। আক্রান্তের বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। আবহাওয়াজনিত কারনেই রোগীর চাপ বেড়েছে বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পরিমানে তরলজাত খাবার খাওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য বিভাগের।
প্রখর রোদের পাশাপাশি ভ্যাপসা গরমে অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। মাদারীপুর জেলা সদর হাসপাতালে হঠাৎ বেড়েছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, হাঁপানি রোগের প্রকোপ। তার সাথে পাল্লা দিয়ে রোগীরা ভর্তি হচ্ছে শ^াসকষ্ট, জ¦র, বুকে ব্যাথাসহ নানা রোগের উপসর্গ নিয়ে। প্রতিদিন গড়ে ভর্তি হচ্ছেন শতাধিক রোগী। যার অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। সেবা নিতে বর্হিবিভাগেও বাড়ছে ভিড়। প্রতিরোধে বেশি করে তরলজাত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এমন পরিস্থিতিতে হিমশিম অবস্থা চিকিৎসক ও নার্সদের। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাবার কথা জানান তারা। আবহাওয়াজনিত কারনেই পানিবাহিত রোগীর চাপ বেড়েছে জানিয়ে শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বেশি যতœবান হওয়ার পরামর্শ জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, ডায়রিয়া রোগীর জন্য জেলা সদর হাসপাতালে ৬টি আসন থাকলেও বর্তমানে তা বাড়িয়ে ৩২টি করা হয়েছে। পুরাতন ভবনে দেয়া হচ্ছে এ রোগের চিকিৎসা। এছাড়া পানিবাহিত অন্যান্য রোগীদের সেবা হয় ৬তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের নতুন ভবনে।
চন্দ্রপুর থেকে আসা শওকত মিয়া বলেন, আমার বাচ্চার ডায়রিয়া হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। প্রথমে খারাপ অবস্থা হলেও এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
আকতার শেখ নামে একজন বলেন, আমার মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করি। স্যালাইনসহ ওষুধ চলছে, ঘন ঘন পাতলা পায়খানা করায় মেয়েটি দুর্বল হয়ে পড়ে। এখন কিছু সুস্থ।
কালকিনির ভুরঘাটা থেকে আসা দেড় বছরের রাফচানের দাদী দিলরুবা বেগম বলেন, প্রথমে প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গিয়েছিলাম। অবস্থা খারাপ হওয়ায় সদর হাসপাতালে নিয়ে আসি। ৪দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। নাতীর জ¦র কমলেও পাতলা পায়খানা এখনো কমেনি।
মাদারীপুর সদর হাসপতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স কল্যাণী সরকার বলেন, হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে। তারপরও সাধ্যমতো সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আসনের দ্বিগুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
মাদারীপুর সদর হাসপতালের তত্ত্ববধায়ক ও সিভিল সার্জণ ডা. মুনীর আহম্মেদ খান, দুূষিত পানির ব্যবহার এ পানিবাহিত রোগের অন্যতম কারণ। পঁচা-বাসি খাবার খেলেও এ রোগ হতে পারে। পানিবাহিত রোগ দেখা দিলে পর্যাপ্ত পরিমানে তরলজাত খাবার খেতে হবে। এছাড়া উপসর্গ দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরও পরামর্শ নিতে হবে।