• ঢাকা, বাংলাদেশ
  • মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

যৌথ সামরিক মহড়ায় ইন্দোনেশিয়া প্রথবারের মতো রাশিয়ার সঙ্গে

যৌথ সামরিক মহড়ায় ইন্দোনেশিয়া প্রথবারের মতো রাশিয়ার সঙ্গে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রথমবারের মতো যৌথ সামরিক নৌ-মহড়া করছে রাশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। জাভা সমুদ্রে শুরু হয়েছে দুই দেশের নৌ-মহড়া। সোমবার থেকে শুরু হওয়া এই মহড়া চলবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত। জাভা সমুদ্রের কাছে ইন্দোনেশিয়ার শহর সুরাবায়াকে এই মহড়ার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

রোববারই জাভার কাছে পৌঁছেছে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ। তিনটি করভেট ক্লাসের যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে রাশিয়া। সঙ্গে আছে একটি মাঝারি আয়তনের ট্যাঙ্কার, একটি হেলিকপ্টার এবং একটি টাগবোট।

ধারণা করা হচ্ছে, ইন্দোনেশিয়ার সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ানতো রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরো মজবুত করতে চান। তারই অন্যতম পদক্ষেপ এই নৌ-মহড়া।

ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর কমান্ডার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে এই যৌথ মহড়া দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে মজবুত করবে। অন্যদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, এই মহড়া দুই দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি করবে।

২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রাইমিয়া দখল করে। এরপর ২০১৯ সালে শুরু হয় ইউক্রেন অভিযান। ক্রাইমিয়ার পরেই জাকার্তার সঙ্গে মস্কোর বাণিজ্যিক সম্পর্ক হোঁচট খায়। দুই দেশের মধ্যে কয়েক বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ক্রমশ তা খারাপ হতে থাকে। ইউক্রেনের পর পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ হয়।

নতুন প্রেসিডেন্ট সেই সম্পর্ক আবার পুরনো জায়গায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন। বস্তুত, এর আগে তিনি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তখন থেকেই রাশিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করেছিলেন তিনি। যার জেরে আমেরিকার হুমকির মুখেও পড়তে হয়েছিল তাকে।

কূটনৈতিক ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থান নেয়। রাশিয়ার সঙ্গে তাদের যৌথ মহড়া সেই অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। বস্তুত, ইন্দোনেশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গেও নিরপেক্ষ অবস্থানে অটল থেকেছে। কোনো পক্ষকেই তারা ভোট দেয়নি।

ডয়চে ভেলে’র এশিয়া-প্যাসিফিক দপ্তরের প্রধান জর্জ ম্যাথেস মনে করেন, ইন্দোনেশিয়ার কূটনৈতিক অবস্থান বদলায়নি। রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়াকে তিনি একটি রুটিন কুচকাওয়াজ হিসেবেই দেখতে চান। তার বক্তব্য, সম্প্রতি জার্মানির সঙ্গেও একই ধরনের মহড়ায় অংশ নিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌসেনা। বস্তুত, ২০০৬ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নৌ-মহড়ায় অংশ নেয় ইন্দোনেশিয়া। ফলে রাশিয়ার সঙ্গে এই মহড়াকে আলাদা করে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ নেই বলেই তিনি মনে করেন।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্দোনেশিয়া সবচেয়ে বড় বাজার। ঐতিহাসিক কাল থেকেই এই বাজারে বড় বিনিয়োগ করে রাশিয়া। ফলে সেদিক থেকেও রাশিয়ার সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার এই সম্পর্ক নতুন কিছু নয় বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য। 

ম্যাথেসের মতে, ইন্দোনেশিয়ার এই পদক্ষেপ আবার প্রমাণ করলো, দেশটি তার নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখতে চায়। সে কারণেই রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে সম্পর্কের পথে হাঁটছে তারা। মাঝে বেশ কিছু বছর ক্রমশ যা কার্যত তলানিতে গিয়ে পৌঁছেছিল।

০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২০পিএম, ঢাকা-বাংলাদেশ।