ভারতে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেবে এআই
প্রতিকী ছবি
সম্প্রতি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যা ও খরার প্রকোপ বেড়েছে ভারতে। ফলে আবহাওয়ার আরও নির্ভুল ও কার্যকর পূর্বাভাস পেতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার বাড়াচ্ছে দেশটি। ভারতের এক শীর্ষ আবহাওয়া কর্মকর্তার বরাত দিয়ে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
রয়টার্স বলছে, ভারত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে জলবায়ু মডেল তৈরির পরীক্ষা চালাচ্ছে। যা আরও নির্ভুলভাবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে পারবে।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক উষ্ণতা ভারতে আবহাওয়া পরিস্থিতির অবনতি ঘটার মূল কারণ। যার ফলে বেড়েছে দুর্যোগের সংখ্যাও। ইন্ডিপেনডেন্ট সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের প্রাক্কলন মতে, এসব দুর্যোগে চলতি বছরে প্রায় তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সারা বিশ্বেই আবহাওয়া বিভাগগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে নজর দিচ্ছে। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে আরও দ্রুত ও নির্ভুল পূর্বাভাস পাওয়া যাবে এবং সার্বিকভাবে খরচও কমে আসবে বলে মত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি গুগলের অর্থায়নে তৈরি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবহাওয়া মডেল কার্যকারিতায় প্রচলিত পদ্ধতিগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। ব্রিটেনের আবহাওয়া অফিস বলছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আবহাওয়ার পূর্বাভাসে 'বিপ্লব' আনতে পারে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) গাণিতিক মডেলের ওপর ভিত্তি করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়। বিশেষজ্ঞদের মত, এর সঙ্গে এআই ও অত্যাধুনিক পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক যোগ করা হলে কম খরচে উঁচু মানের পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হবে।
আইএমডির জলবায়ু গবেষণা বিভাগের প্রধান কে. এস. হোসালিকার বলেন, তারা এআইভিত্তিক জলবায়ু মডেল ও সতর্কীকরণ ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছেন। তাদের প্রত্যাশা, এতে পূর্বাভাস আরও উন্নত হবে।
হোসালিকার বলেন, এর আগে আবহাওয়া অফিস তাপপ্রবাহ ও ম্যালেরিয়ার মতো রোগ সম্পর্কে জনসাধারণকে সতর্ক করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছে। বর্তমানে তারা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন বলে জানান হোসালিকার। যার ফলে একেবার গ্রাম পর্যায়ের ডেটা পাওয়া যাবে এবং পূর্বাভাস আরও উপযোগী হবে।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) দিল্লি'র সহকারী অধ্যাপক সৌরভ রাঠোর বলেন, 'একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল চালানোর জন্য উচ্চ খরচের সুপার কম্পিউটার প্রয়োজন হয় না। আপনি এটি একটি ভালো মানের ডেস্কটপ থেকেও চালাতে পারবেন।'
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজন আরও উন্নত ডেটা।